রাষ্ট্রনায়ক জিয়াউর রহমান: এক কর্মময় জীবনের দলিল

বাংলাদেশের ইতিহাসে যে কজন ব্যক্তিত্ব গভীর এবং দীর্ঘস্থায়ী প্রভাব রেখে গেছেন, প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান তাঁদের মধ্যে অন্যতম। তিনি একাধারে একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা, সেনাপ্রধান এবং পরবর্তীতে একজন প্রভাবশালী রাষ্ট্রনায়ক, যার গৃহীত নীতি ও দর্শন বাংলাদেশের গতিপথ নির্ধারণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। তাঁর শাসনামল, গৃহীত পদক্ষেপ এবং রাজনৈতিক দর্শন নিয়ে বহুমুখী আলোচনা ও বিশ্লেষণ বিদ্যমান।

এই প্রবন্ধে আমরা মূলত কাদের গনি চৌধুরী রচিত একটি পর্যালোচনার আলোকে জিয়াউর রহমানের জীবন ও কর্মের বিভিন্ন দিক তুলে ধরব। এর উদ্দেশ্য হলো, একজন পাঠক হিসেবে তাঁর অবদান, রাষ্ট্র পরিচালনা পদ্ধতি এবং উত্তরাধিকার সম্পর্কে একটি স্বচ্ছ ও বস্তুনিষ্ঠ ধারণা লাভ করা।


রাষ্ট্রনায়ক হিসেবে উত্থান: এক ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপট

১৯৭৫ সালের ৭ই নভেম্বরের সিপাহী-জনতার বিপ্লবের মধ্য দিয়ে জিয়াউর রহমান বাংলাদেশের রাজনীতির কেন্দ্রবিন্দুতে আসেন। একটি অস্থির ও অনিশ্চিত রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষা এবং সেনাবাহিনীতে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনার ক্ষেত্রে তাঁর ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হিসেবে বিবেচিত হয়। তাঁর সমর্থক ও বিশ্লেষকদের মতে, জাতির এক ক্রান্তিকালে তিনি হাল ধরেছিলেন এবং দেশকে স্থিতিশীলতার পথে ফিরিয়ে এনেছিলেন।


রাষ্ট্র পরিচালনায় জিয়া: পাঁচটি প্রধান নীতি ও অর্জন

লেখক কাদের গনি চৌধুরীর মতে, প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের অসংখ্য কীর্তির মধ্যে পাঁচটি কাজ তাঁকে ইতিহাসে অমর করে রাখবে। এগুলোকে তাঁর রাষ্ট্র পরিচালনার মূল স্তম্ভ হিসেবেও দেখা হয়।

১. স্বাধীনতার ঘোষণা ও মুক্তিযুদ্ধ

১৯৭১ সালের ২৫শে মার্চ রাতে পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর অতর্কিত আক্রমণের পর সমগ্র জাতি যখন দিশেহারা, তখন চট্টগ্রামের কালুরঘাট বেতার কেন্দ্র থেকে মেজর জিয়ার কণ্ঠে স্বাধীনতার ঘোষণা জাতিকে ঘুরে দাঁড়ানোর জন্য অনুপ্রাণিত করে। “আমি মেজর জিয়া বলছি”—এই বজ্রকণ্ঠের ঘোষণা মুক্তি সংগ্রামে ঝাঁপিয়ে পড়তে সাধারণ মানুষ ও বাঙালি সৈন্যদের মধ্যে সাহস জুগিয়েছিল।

মুক্তিযুদ্ধের একজন দক্ষ সংগঠক হিসেবে তিনি শুধু ঘোষণাই দেননি, রণাঙ্গনেও নেতৃত্ব দিয়েছেন। তাঁর নামের আদ্যক্ষর দিয়ে গঠিত হয় মুক্তিযুদ্ধের প্রথম সামরিক ব্রিগেড ‘জেড ফোর্স’। এই ফোর্সের অধীনে কামালপুর, বিলোনিয়া, চিলমারী উভচর অভিযানসহ অসংখ্য গুরুত্বপূর্ণ যুদ্ধে তিনি প্রত্যক্ষ পরিকল্পনা ও নির্দেশনা প্রদান করেন। মুক্তিযুদ্ধের ১১নং সেক্টরের কমান্ডার হিসেবে তাঁর অবদান ছিল অনস্বীকার্য। তৎকালীন মুজিবনগর সরকারের প্রধানমন্ত্রী তাজউদ্দীন আহমদও জিয়ার নেতৃত্বাধীন প্রতিরোধকে ঐতিহাসিক ‘স্টালিনগ্রাদের’ যুদ্ধের সঙ্গে তুলনা করে তাঁর বীরত্বের স্বীকৃতি দিয়েছিলেন।

২. ‘বাংলাদেশি জাতীয়তাবাদ’: জাতিসত্তার নতুন পরিচয়

রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান বাংলাদেশের জনগণের জন্য একটি স্বতন্ত্র জাতীয় পরিচয়ের প্রয়োজনীয়তা অনুভব করেন। তিনি বাঙালি পরিচয়কে ভাষা ও সংস্কৃতির অংশ হিসেবে রেখে, দেশের ভৌগোলিক সীমানার মধ্যে বসবাসকারী সকল নাগরিকের জন্য ‘বাংলাদেশি জাতীয়তাবাদ’-এর ধারণা প্রবর্তন করেন। তাঁর দর্শন ছিল, “ধর্মের দিক থেকে আমরা কেউ মুসলিম, কেউ হিন্দু, কেউ বৌদ্ধ কিংবা খ্রিস্টান… পাহাড় বা সমতলের যেখানেই আমাদের আবাসভূমি হোক না কেন… আমরা চিরকাল এক জাতি হয়ে থাকব—আমরা বাংলাদেশি।”

এই ধারণাটি বিশেষভাবে পার্বত্য চট্টগ্রামের ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর মানুষদের জন্য তাৎপর্যপূর্ণ ছিল। ১৯৭২ সালের সংবিধানে তাদের ‘বাঙালি’ হিসেবে আখ্যায়িত করায় মানবেন্দ্র নারায়ণ লারমার মতো নেতারা এর তীব্র বিরোধিতা করেন। জিয়াউর রহমান ক্ষমতায় এসে ১৯৭৯ সালে সংবিধানের পঞ্চম সংশোধনীর মাধ্যমে ‘বাংলাদেশি জাতীয়তাবাদ’ প্রবর্তন করেন, যা দেশের সকল ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর মানুষকে জাতিগত পরিচয়ের স্বীকৃতি দেয় এবং তাদের মধ্যে দেশের প্রতি একাত্মবোধ তৈরি করে।

৩. বহুদলীয় গণতন্ত্রের পুনঃপ্রবর্তন

১৯৭৫ সালে একদলীয় শাসনব্যবস্থা (বাকশাল) প্রবর্তনের ফলে দেশে রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড সীমিত হয়ে পড়েছিল। জিয়াউর রহমান গণতন্ত্রকে শক্তিশালী করার লক্ষ্যে বহুদলীয় রাজনীতির দরজা উন্মুক্ত করেন। তিনি ১৯৭৬ সালে ‘রাজনৈতিক দল বিধি’ জারি করেন, যার ফলে আওয়ামী লীগসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দল পুনরায় সক্রিয় হওয়ার সুযোগ পায়। তাঁর এই পদক্ষেপ দেশে একটি গণতান্ত্রিক পরিবেশ ফিরিয়ে আনতে সহায়ক হয়েছিল বলে মনে করা হয়।

৪. বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) প্রতিষ্ঠা

জিয়াউর রহমান তাঁর রাজনৈতিক দর্শন বাস্তবায়নের জন্য একটি গণমুখী প্ল্যাটফর্মের প্রয়োজনীয়তা থেকে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) গঠন করেন। তিনি প্রচলিত ‘স্লোগাননির্ভর’ রাজনীতির পরিবর্তে ‘উন্নয়ন ও উৎপাদনের রাজনীতি’ চালু করেন। খাল খনন, নিরক্ষরতা দূরীকরণ, রাস্তাঘাট নির্মাণের মতো কর্মসূচিতে দলের নেতাকর্মী ও সাধারণ মানুষকে সরাসরি সম্পৃক্ত করে তিনি রাজনীতিকে জনগণের দোরগোড়ায় নিয়ে যান। তাঁর এই গণমুখী কর্মকাণ্ডের ফলে বিএনপি অল্প সময়েই জনপ্রিয়তা অর্জন করে এবং দেশের অন্যতম প্রধান রাজনৈতিক দলে পরিণত হয়।

৫. স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষা

১৯৭৫ সালের নভেম্বরের প্রথমার্ধে সেনাবাহিনীতে সৃষ্ট বিশৃঙ্খলা এবং রাজনৈতিক অস্থিরতা দেশের স্বাধীনতাকে হুমকির মুখে ফেলেছিল। ৭ই নভেম্বরের ঘটনাপ্রবাহের মধ্য দিয়ে ক্ষমতায় এসে জিয়াউর রহমান সেনাবাহিনীতে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনেন এবং সব ষড়যন্ত্র মোকাবেলা করে দেশের সার্বভৌমত্বকে নিরাপদ করেন। এই কারণে তাঁকে দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বের রক্ষক হিসেবেও অভিহিত করা হয়।


উন্নয়ন ও উৎপাদনের রাজনীতি: একটি নতুন ধারা

জিয়াউর রহমানের শাসনামলের অন্যতম বৈশিষ্ট্য ছিল দেশের অর্থনৈতিক ও সামাজিক ভিত্তি শক্তিশালী করার উপর গুরুত্বারোপ করা।

অর্থনৈতিক ভিত্তি নির্মাণ

  • তৈরি পোশাক শিল্প: বাংলাদেশের অর্থনীতির বর্তমান চালিকাশক্তি তৈরি পোশাক শিল্পের প্রাতিষ্ঠানিক ভিত্তি জিয়াউর রহমানের সময়েই স্থাপিত হয়। ১৯৭৮ সালে দক্ষিণ কোরীয় প্রতিষ্ঠান ‘দেইউ’-এর সাথে যৌথ উদ্যোগে ‘দেশ গার্মেন্টস’ প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে এর যাত্রা শুরু। তাঁর সরকার কর্তৃক প্রবর্তিত ‘স্পেশাল বন্ডেড ওয়্যারহাউস’ স্কিম এই শিল্পের বিকাশে যুগান্তকারী ভূমিকা রাখে।
  • জনশক্তি রপ্তানি: দক্ষ জনশক্তি বিদেশে প্রেরণের মাধ্যমে রেমিট্যান্স অর্জনের ধারাটিও তাঁর হাত ধরে শুরু হয়। ১৯৭৬ সালে তিনি বাংলাদেশ জনশক্তি কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরো (বিএমইটি) প্রতিষ্ঠা করেন, যা আজও দেশের অন্যতম প্রধান বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনের খাত।
  • ব্লু-ইকোনমি (সমুদ্র অর্থনীতি): সমুদ্রের বিশাল সম্পদ আহরণের সম্ভাবনার কথা প্রথম উপলব্ধি করেন জিয়াউর রহমান। তাঁর উদ্যোগেই সমুদ্র বিজ্ঞান ইনস্টিটিউট প্রতিষ্ঠা এবং ‘হিজবুল বাহার’ জাহাজে করে বঙ্গোপসাগরে শিক্ষা সফরের মতো pioneeriং পদক্ষেপ নেওয়া হয়।

আইনশৃঙ্খলা ও সামাজিক স্থিতিশীলতা

জিয়াউর রহমান দায়িত্ব গ্রহণের পূর্বে দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি অত্যন্ত নাজুক ছিল বলে বিভিন্ন বর্ণনায় উঠে আসে। কাদের গনি চৌধুরী তাঁর লেখায় সাংবাদিক নির্মল সেন এবং আহমেদ মুসার বই থেকে রক্ষীবাহিনীর কার্যক্রম সংক্রান্ত কিছু ঘটনার উদ্ধৃতি দিয়ে তৎকালীন পরিস্থিতি তুলে ধরেছেন। জিয়াউর রহমান রাষ্ট্রীয়ভাবে কঠোর হাতে আইনশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণ করেন, যার ফলে দেশে স্থিতিশীলতা ফিরে আসে এবং সাধারণ মানুষ স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলে। তাঁর শাসনামলে সামাজিক নিরাপত্তা এমন পর্যায়ে পৌঁছেছিল যে, মানুষ রাতে ঘরের দরজা খোলা রেখেও ঘুমাতে পারত বলে প্রচলিত আছে।


সাংস্কৃতিক ও প্রাতিষ্ঠানিক সংস্কার

জিয়াউর রহমান কেবল রাজনীতি বা অর্থনীতি নয়, দেশের শিক্ষা, সংস্কৃতি ও গণমাধ্যমের বিকাশেও গভীর মনোযোগ দিয়েছিলেন।

সাংস্কৃতিক জাগরণ ও স্বীকৃতি

  • প্রতিষ্ঠান নির্মাণ: তিনি সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রণালয়, রাঙামাটিতে ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর সাংস্কৃতিক ইনস্টিটিউট এবং নেত্রকোনার বিরিশিরিতে উপজাতীয় কালচারাল একাডেমি প্রতিষ্ঠা করেন।
  • রাষ্ট্রীয় সম্মাননা: একুশে পদকস্বাধীনতা পদক চালুর মাধ্যমে তিনি দেশের গুণীজনদের সম্মানিত করার সংস্কৃতি চালু করেন। জহির রায়হান, আলতাফ মাহমুদ এবং মুনীর চৌধুরীর মতো ব্যক্তিত্বদের মরণোত্তর রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি তাঁর সময়েই প্রদান করা হয়।
  • নতুন কুঁড়ি: শিশুদের প্রতিভা বিকাশের লক্ষ্যে বাংলাদেশ টেলিভিশনে ‘নতুন কুঁড়ি’ নামে দেশের প্রথম ‘ট্যালেন্ট হান্ট’ প্রতিযোগিতা চালু করেন, যা থেকে সামিনা চৌধুরী, তারানা হালিম, তারিন, ঈশিতার মতো অনেক তারকা উঠে এসেছেন।
  • চলচ্চিত্র: চলচ্চিত্র শিল্পের বিকাশে তিনি গাজীপুরে ফিল্ম সিটিফিল্ম আর্কাইভ প্রতিষ্ঠা করেন এবং রাষ্ট্রীয় অনুদান প্রথা চালু করেন। তাঁর অনুদানেই নির্মিত হয় বাংলাদেশের প্রথম শিশুতোষ চলচ্চিত্র ‘এমিলের গোয়েন্দা বাহিনী’

গণমাধ্যম ও শিশুদের উন্নয়ন

  • গণমাধ্যমের স্বাধীনতা: সংবাদপত্রের ওপর থেকে কঠোর নিয়মকানুন শিথিল করে তিনি গণমাধ্যমের স্বাধীনতা নিশ্চিত করেন। সাংবাদিকদের পেশাগত মান উন্নয়নে প্রেস ইনস্টিটিউট (পিআইবি) এবং তাদের অধিকার রক্ষায় ওয়েজ বোর্ডপ্রেস কাউন্সিল গঠন করেন।
  • শিশু উন্নয়ন: “আজকের শিশুই আগামীর ভবিষ্যৎ”—এই বিশ্বাস থেকে তিনি শিশু একাডেমি, ঢাকায় শিশু পার্ক এবং একটি শিশু গ্রন্থাগার প্রতিষ্ঠা করেন। ১৯৭৯ সালকে তিনি ‘শিশুবর্ষ’ হিসেবে ঘোষণা করেন।

আন্তর্জাতিক সম্পর্ক ও কূটনীতি

জিয়াউর রহমানের শাসনামলে বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক অঙ্গনে একটি স্বতন্ত্র ও মর্যাদাপূর্ণ অবস্থান তৈরি করে।

  • তিনি মুসলিম বিশ্বের সাথে সম্পর্ক উন্নয়ন করেন এবং বাংলাদেশের আল-কুদস কমিটির সদস্যপদ লাভ তাঁর একটি বড় কূটনৈতিক সাফল্য।
  • চীনের সাথে বাংলাদেশের আনুষ্ঠানিক হৃদ্যতাপূর্ণ সম্পর্ক তাঁর সময়েই শুরু হয়।
  • দক্ষিণ এশীয় দেশগুলোর মধ্যে পারস্পরিক সহযোগিতার লক্ষ্যে তিনি সার্ক (SAARC) গঠনের স্বপ্ন দেখেন এবং এর প্রাথমিক রূপরেখা প্রণয়ন করেন।
  • ফারাক্কা বাঁধের পানি বণ্টন এবং রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনের মতো জটিল বিষয়গুলোতে তিনি সফল কূটনৈতিক পদক্ষেপ গ্রহণ করেন। তাঁর সরকারের দৃঢ় অবস্থানের ফলেই ১৯৭৮-৭৯ সালে প্রায় সকল রোহিঙ্গাকে মিয়ানমারে ফেরত পাঠানো সম্ভব হয়েছিল।

উপসংহার: একজন রাষ্ট্রনায়কের মূল্যায়ন

মাত্র ৪৫ বছরের সংক্ষিপ্ত জীবনে জিয়াউর রহমান বাংলাদেশের ইতিহাসে এক অবিস্মরণীয় ছাপ রেখে গেছেন। তিনি ছিলেন একাধারে স্বপ্নদ্রষ্টা এবং বাস্তবায়নকারী। তাঁর সমালোচকরা তাঁর কিছু পদক্ষেপ নিয়ে প্রশ্ন তুললেও, তাঁর সমর্থকরা তাঁকে ‘আধুনিক বাংলাদেশের রূপকার’ হিসেবেই দেখেন।

রাষ্ট্রীয় প্রটোকল ভেঙে সাধারণ মানুষের সাথে মিশে যাওয়া, কোদাল হাতে খাল খনন কর্মসূচিতে অংশ নেওয়া এবং দেশের উন্নয়নে তরুণ সমাজকে সম্পৃক্ত করার মাধ্যমে তিনি ‘চারণ রাজনীতিক’-এর পরিচয় দিয়েছিলেন। তাঁর গৃহীত অর্থনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক নীতিগুলো আজও বাংলাদেশকে নানাভাবে প্রভাবিত করে চলেছে। একজন ব্যক্তি হিসেবে তাঁর সততা ও দেশপ্রেম নিয়ে তাঁর কট্টর সমালোচকরাও সাধারণত প্রশ্ন তোলেন না। সব মিলিয়ে, জিয়াউর রহমান এমন একজন রাষ্ট্রনায়ক, যাঁকে ছাড়া বাংলাদেশের আধুনিক ইতিহাস অসম্পূর্ণ থেকে যায়।

About kholaboi

Check Also

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ল্যাবরেটরী স্কুল এন্ড কলেজ: এক প্রাক্তন ছাত্র ও অভিভাবকের ভালোবাসার আর্তি

আমি চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসেরই একজন স্থায়ী বাসিন্দা, কিন্তু কর্মস্থল চট্টগ্রাম ইপিজেড-এর বেপজা পাবলিক স্কুল ও …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!
Skip to toolbar