কর আইন ও প্রযুক্তির নতুন দিগন্ত

ই-টিআইএন’ থাকলেই রিটার্ন দিতে হবে নিজস্ব সার্কেলে

বাংলাদেশ সরকারের জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) কর আদায়ে প্রযুক্তির ব্যবহার ও স্বচ্ছতা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে আরও একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। বর্তমানে যেকোনো করদাতার জন্য ইলেকট্রনিক কর শনাক্তকরণ নম্বর বা ‘ই-টিআইএন’ থাকলেই সংশ্লিষ্ট কর অঞ্চল বা ‘সার্কেলে’ বাধ্যতামূলকভাবে বার্ষিক আয়কর রিটার্ন দাখিল করতে হবে। এছাড়া, আগামী ২০২৬ সাল থেকে ই-টিআইএন ও ফাইল ট্রান্সফারের সুযোগ আর থাকছে না।

প্রতিবেদনের মূল বিষয়বস্তু:

১. রিটার্ন দাখিল বাধ্যতামূলক: এখন থেকে যার ‘ই-টিআইএন’ (e-TIN) আছে, তাকে আবশ্যিকভাবে রিটার্ন জমা দিতে হবে। রিটার্ন দাখিল না করলে কর আইনের ২৯ ধারার অপরাধ হিসেবে গণ্য করা হবে।

২. ‘নিজস্ব সার্কেলে’ রিটার্ন জমা: আগে অনেক করদাতা রিটার্ন দাখিলের ক্ষেত্রে কর অঞ্চল বা সার্কেল পরিবর্তনের আবেদন করতে পারতেন। কিন্তু এনবিআর-এর নতুন নির্দেশনায় বলা হয়েছে, ‘ই-টিআইএন’ থাকলেই যেকোনো করদাতাকে তার ‘নিজস্ব সার্কেলে’ রিটার্ন দাখিল করতে হবে।

৩. ফাইল ট্রান্সফার বন্ধের ঘোষণা: আগামী ২০২৬ সালের ১লা জুলাই থেকে ‘ই-টিআইএন’ এবং ‘ফাইল ট্রান্সফার’-এর সুযোগ বাতিল করা হবে। অর্থাৎ, একবার যে সার্কেলে করদাতার ফাইল তৈরি হবে, তিনি চাইলেও আর সেই সার্কেল পরিবর্তন করতে পারবেন না। এই সিদ্ধান্ত করদাতার সংখ্যা বৃদ্ধি ও রাজস্ব আহরণ প্রক্রিয়াকে আরও সুসংগঠিত করবে বলে মনে করা হচ্ছে।

৪. ডিজিটাল ফাইল ট্রান্সফারের সুযোগ: এই নির্দেশনা কার্যকর হওয়ার আগে, করদাতাদের শেষ সুযোগ হিসেবে চলতি বছরের ৩০ জুনের মধ্যে ডিজিটাল পদ্ধতিতে ফাইল ট্রান্সফারের আবেদন করার সময়সীমা বেঁধে দেওয়া হয়েছিল। এখন আর ম্যানুয়াল বা নতুন করে কোনো ফাইল ট্রান্সফারের আবেদন গ্রহণ করা হবে না।

মন্তব্য: এই পদক্ষেপ নিঃসন্দেহে কর প্রশাসনকে আরও আধুনিক ও ডিজিটাল করার ক্ষেত্রে একটি মাইলফলক। ‘খোলাবই’ মনে করে, কর আইন সংক্রান্ত এই গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তন সম্পর্কে শিক্ষক, শিক্ষার্থী, অভিভাবক এবং সকল পেশাজীবী নাগরিকের সচেতন হওয়া অত্যন্ত জরুরি। বিশেষ করে তরুণ ও প্রযুক্তিনির্ভর পেশাজীবীরা যারা বর্তমানে ই-টিআইএন ব্যবহার করছেন, তাদের অবশ্যই নিজস্ব সার্কেলে রিটার্ন দাখিলের বিষয়টি নিশ্চিত করতে হবে।

এনবিআর-এর এই কঠোর পদক্ষেপ কর সংগ্রহে শৃঙ্খলা আনবে এবং রাজস্ব ফাঁকি কমাতে সাহায্য করবে। করদাতাদের উচিত, নিজেদের আইনি বাধ্যবাধকতা সম্পর্কে অবগত থাকা এবং সময়মতো কর সংক্রান্ত কাজগুলো সম্পন্ন করা। এটি শুধুমাত্র দেশের অর্থনীতিকেই শক্তিশালী করবে না, বরং একজন দায়িত্বশীল নাগরিক হিসেবেও আপনার পরিচয়কে সুদৃঢ় করবে।

About The Author

About Admin

Check Also

এমপিওভুক্ত শিক্ষা ব্যবস্থা: আবেদন প্রক্রিয়া এবং আদালতের নির্দেশনা

বাংলাদেশের বেসরকারি শিক্ষা ব্যবস্থার অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ অংশ হলো এমপিও বা মান্থলি পেমেন্ট অর্ডার (Monthly Pay …

Leave a Reply

error: Content is protected !!
Skip to toolbar