চবির দীর্ঘদিনের পানির সমস্যা সমাধান: চালু হলো আয়রন রিমুভাল প্লান্ট

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, শিক্ষার্থী এবং কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জন্য একটি দারুণ খবর! ক্যাম্পাসে বিশুদ্ধ ও আয়রনমুক্ত পানি সরবরাহ নিশ্চিত করতে ১৯ আগস্ট, ২০২৫ তারিখে একটি আধুনিক ‘ওয়াটার ট্রিটমেন্ট প্লান্ট’ বা আয়রন রিমুভাল প্লান্ট উদ্বোধন করা হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের ফরেস্ট্রি অ্যান্ড এনভায়রনমেন্টাল সায়েন্সেস ইনস্টিটিউটের গ্যারেজের কাছে এই প্লান্টটি স্থাপন করা হয়।

কেন এই প্লান্টের প্রয়োজন ছিল?

বিশ্ববিদ্যালয়ের ফরেস্ট্রি ইনস্টিটিউটের কাছে একটি গভীর নলকূপ রয়েছে, যা থেকে ক্যাম্পাসে পানি সরবরাহ করা হতো। কিন্তু সেই পানিতে আয়রনের পরিমাণ অনেক বেশি ছিল। ফলে শিক্ষক-শিক্ষার্থীসহ ক্যাম্পাসের বাসিন্দারা দীর্ঘদিন ধরে নানা সমস্যায় ভুগছিলেন। এই সমস্যা সমাধানের জন্যই বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এই ওয়াটার ট্রিটমেন্ট প্লান্ট স্থাপনের উদ্যোগ নেয়।

কীভাবে কাজ করবে এই প্লান্ট?

এই প্লান্টটি একটি স্বয়ংক্রিয় প্রক্রিয়ার মাধ্যমে পানিকে বিশুদ্ধ করবে। এর কার্যप्रणाली বেশ সহজ:

  • প্রথম ধাপ: গভীর নলকূপ থেকে তোলা আয়রনযুক্ত পানি প্রথমে একটি ট্যাংকে (Raw Water Tank) জমা হবে।

  • দ্বিতীয় ধাপ: এরপর পাম্প হাউজের মাধ্যমে বিভিন্ন প্রক্রিয়ায় পানি থেকে আয়রন ও অন্যান্য ময়লা আলাদা করা হবে।
  • তৃতীয় ধাপ: পরিশোধিত বিশুদ্ধ পানি (Pure Water) আরেকটি ট্যাংকে জমা হয়ে ফিল্টারিং হবে।
  • চতুর্থ ধাপ: সবশেষে, এই বিশুদ্ধ পানি বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল পানির লাইনের সঙ্গে যুক্ত হয়ে সারা ক্যাম্পাসে সরবরাহ করা হবে।

এ.কে. খান গ্রুপের সহযোগী প্রতিষ্ঠান ‘ফ্লো ওয়াটার’ এই প্লান্টটি নির্মাণের কাজ সম্পন্ন করেছে।

এই উদ্যোগের সুফল কী?

এই প্লান্ট চালুর ফলে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় পরিবার নানাভাবে উপকৃত হবে:

  • বিশুদ্ধ পানি: এখন থেকে সবাই আয়রনমুক্ত বিশুদ্ধ ও নিরাপদ পানি পাবে।
  • স্বাস্থ্য সুরক্ষা: নিরাপদ পানি ব্যবহারের ফলে পানিবাহিত রোগ থেকে সুরক্ষা মিলবে এবং একটি স্বাস্থ্যকর পরিবেশ নিশ্চিত হবে।
  • সংকট নিরসন: ক্যাম্পাসের দীর্ঘদিনের পানির সংকট অনেকাংশে কমে আসবে।
  • টেকসই উন্নয়ন: এই উদ্যোগ বিশ্ববিদ্যালয়ের আধুনিকায়ন ও টেকসই উন্নয়নের পথে একটি নতুন মাইলফলক।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে যা বলা হলো

প্লান্টটির উদ্বোধন করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (একাডেমিক) প্রফেসর ড. মোহাম্মদ শামীম উদ্দিন খান এবং উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) প্রফেসর ড. মো. কামাল উদ্দিন।

তাঁরা বলেন, এই প্লান্টটি বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ অর্জন। নিরাপদ পানি মানুষের মৌলিক অধিকার, আর একটি আধুনিক শিক্ষাঙ্গনের জন্য এটি অপরিহার্য। এর মাধ্যমে ক্যাম্পাসে একটি সুস্থ ও স্বাস্থ্যকর পরিবেশ তৈরি হবে, যা বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণা ও অ্যাকাডেমিক কার্যক্রমেও ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে। তাঁরা এই মহৎ উদ্যোগ বাস্তবায়নের সঙ্গে জড়িত প্রকৌশলীসহ সকলকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানান।

<

p style=”text-align: justify;”> এই অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন বিজ্ঞান অনুষদের ডিন, ফরেস্ট্রি ইনস্টিটিউটের পরিচালক এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রকৌশল দপ্তরের কর্মকর্তাবৃন্দ।

About The Author

About Admin

Check Also

শিক্ষার সহজ পাঠ

পর্ব ৯: পরীক্ষা, নাকি মূল্যায়ন? শিক্ষায় সঠিক মূল্যায়নের গুরুত্ব “শিক্ষার সহজ পাঠ” সিরিজের গত পর্বগুলোতে …

Leave a Reply

error: Content is protected !!
Skip to toolbar