শিক্ষকতা একটি মহৎ পেশা এবং প্রাথমিক শিক্ষাই একটি জাতির ভিত গড়ে দেয়। আর সেই ভিত গড়ার কারিগরদের নেতা হওয়ার এক দারুণ সুযোগ তৈরি হয়েছে। বাংলাদেশ সরকারি কর্ম কমিশন (পিএসসি) সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শূন্য পদে সরাসরি নিয়োগের জন্য ২,১৬৯ জন প্রধান শিক্ষক নিয়োগের একটি বড় বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছে। দেশের প্রাথমিক শিক্ষা ব্যবস্থাকে আরও শক্তিশালী করতে এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ।
রবিবার (৩১ আগস্ট, ২০২৫) পিএসসি এই বিজ্ঞপ্তিটি অনুমোদন করে এবং তাদের ওয়েবসাইটে প্রকাশ করে। আসুন, এই নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নেওয়া যাক।
একনজরে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি
- পদের নাম: প্রধান শিক্ষক, সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়
- পদ সংখ্যা: ২,১৬৯টি
- গ্রেড (প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত): ১১তম গ্রেড (জাতীয় বেতন স্কেল ২০১৫ অনুযায়ী)
- গ্রেড (প্রশিক্ষণবিহীন): ১২তম গ্রেড (জাতীয় বেতন স্কেল ২০১৫ অনুযায়ী)
- নিয়োগকারী কর্তৃপক্ষ: বাংলাদেশ সরকারি কর্ম কমিশন (পিএসসি)
পদের গুরুত্ব ও প্রেক্ষাপট
প্রধান শিক্ষকের পদটি দ্বিতীয় শ্রেণির গেজেটেড কর্মকর্তার পদমর্যাদার। একারণেই নিয়োগ প্রক্রিয়াটি সরাসরি পিএসসির মাধ্যমে সম্পন্ন করা হচ্ছে, যা স্বচ্ছতা ও যোগ্য প্রার্থী নির্বাচন নিশ্চিত করে।
প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফতরের তথ্যমতে, সারাদেশে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোতে প্রায় ৩২ হাজার প্রধান শিক্ষকের পদ শূন্য রয়েছে। নিয়োগ বিধিমালা অনুযায়ী, প্রধান শিক্ষকের শূন্য পদের ৮০ শতাংশ পদোন্নতির মাধ্যমে এবং বাকি ২০ শতাংশ সরাসরি নিয়োগের মাধ্যমে পূরণ করার বিধান রয়েছে। এই বিজ্ঞপ্তিটি সেই ২০ শতাংশ সরাসরি নিয়োগের একটি অংশ, যা বিপুল সংখ্যক শূন্যপদ পূরণে সহায়তা করবে। দীর্ঘদিন পর এমন একটি বড় নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি নিঃসন্দেহে হাজারো যোগ্য প্রার্থীর জন্য আশার আলো নিয়ে এসেছে।
আবেদনের যোগ্যতা (সম্ভাব্য)
যদিও চূড়ান্ত যোগ্যতার বিস্তারিত বিবরণ পিএসসির মূল বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়েছে, সাধারণত এই পদের জন্য নিম্নলিখিত যোগ্যতাগুলোর প্রয়োজন হয়:
- শিক্ষাগত যোগ্যতা: কোনো স্বীকৃত বিশ্ববিদ্যালয় থেকে দ্বিতীয় শ্রেণি বা সমমানের সিজিপিএসহ স্নাতকোত্তর বা সমমানের ডিগ্রি।
- অভিজ্ঞতা: সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সহকারী শিক্ষক হিসেবে কমপক্ষে ৭ বছরের চাকরির অভিজ্ঞতা।
- বয়স: আবেদনকারীর বয়স সাধারণত ৩৫ বছরের মধ্যে হতে হয়, তবে নির্দিষ্ট কোটার ক্ষেত্রে বয়সসীমা শিথিলযোগ্য হতে পারে।
বিশেষ দ্রষ্টব্য: আবেদন করার পূর্বে পিএসসির ওয়েবসাইট থেকে মূল বিজ্ঞপ্তিটি ডাউনলোড করে সকল শর্তাবলি ও যোগ্যতা ভালোভাবে পড়ে নেওয়ার জন্য অনুরোধ করা হচ্ছে।
আবেদন ও নিয়োগ প্রক্রিয়া
আগ্রহী প্রার্থীদের পিএসসির নির্ধারিত ওয়েবসাইটের (সাধারণত, https://www.google.com/search?q=bpsc.teletalk.com.bd) মাধ্যমে অনলাইনে আবেদন করতে হবে। আবেদন প্রক্রিয়া সম্পন্ন করার পর প্রার্থীদের একটি লিখিত পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে হবে। লিখিত পরীক্ষায় উত্তীর্ণ প্রার্থীদের পরবর্তীতে মৌখিক পরীক্ষার (Viva-voce) জন্য ডাকা হবে। চূড়ান্তভাবে নির্বাচিত প্রার্থীরাই দেশের বিভিন্ন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ পাবেন।
এই নিয়োগ প্রক্রিয়াটি প্রাথমিক শিক্ষা খাতে নতুন নেতৃত্ব তৈরি করবে এবং বিদ্যালয়গুলোর পরিচালনায় আরও গতি আনবে বলে আশা করা যায়। যারা শিক্ষকতার পাশাপাশি প্রশাসনিক দায়িত্ব পালনের মাধ্যমে দেশের ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে সঠিক পথে পরিচালিত করতে চান, তাদের জন্য এটি একটি অনন্য সুযোগ।
তথ্যের উৎস:
১. বাংলাদেশ সরকারি কর্ম কমিশন (পিএসসি) এর প্রাতিষ্ঠানিক ওয়েবসাইট।
২. বাংলা ট্রিবিউনে ৩১ আগস্ট, ২০২৫ তারিখে প্রকাশিত প্রতিবেদন।
৩. প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফতর।